শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সাহিত্য

জীবনের গল্প-২

 প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৪ অক্টোবর ২০২০

জীবনের গল্প-২

মসজিদটি বেশ সুন্দর। পাশেই পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়। ইমাম সাহেব একজন মুফতী। কাছের একটি জামিয়ায় হাদীস পড়ান। মুসল্লীগণ অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে তাকে। ভালোবাসে হৃদয়ের গভীর থেকে। এটা ওটা জানতে চাওয়ার বাহানায় ঘণিষ্ঠ হতে চেষ্টা করে।

 

হুজুরের কাছে দো’আ চাইতে আসে লোকজন। প্রায়ই দেখা যায়, সিঁড়ির গোড়ায় ঝাড়-ফুঁকের জন্য দাঁড়িয়ে আছে কেউ-না-কেউ। তিনি কাউকে না’ বলেন না। আবার কোনও বিনিময়ও নেন না। বলেন, সুস্থতার ফায়সালা তো আল্লাহই করেন। আমরা শুধু তার কাছে চাইতে পারি। কুরআন কারীম পড়ে ফুঁ দেওয়ার চেয়ে বেশি করার মতো কিছুই নেই আমার। এর জন্য বিনিময় দিতে হবে না!

 

আজ দরজায় দাড়িঁয়েছে এক পুলিশ সদস্য। বাড়ি পিরোজপুর। বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে এসেছে। অন্যদের মতো করে ফুঁ দিলেন। দু’দিন পর জানাল সুস্থতার কথা। পথে পেয়ে চা খেতে জোড় আবেদন রাখল। কিন্তু তিনি এড়িয়ে গেলেন। খুব সাবধানে, যেন সে মনে কষ্ট না পায়।

 

সেই থেকে শুরু। প্রায়ই হুজুরের জন্য পথে অপেক্ষা করে সে। দায় শোধ করতে চায়ের কাপে ডাকে। তিনিও এড়িয়ে যান। একদিন বাজার থেকে ফিরছিলেন। দৌড়ে এসে রিক্সা থামিয়ে দিল। আজ কিছু নিতেই হবে।

ভালোবাসার এমন মুহূর্তকে কাজে লাগাতে চাইলেন ইমাম সাহেব। দরদী স্বরে বললেন- মসজিদের কাছেই তো থাকেন, নামায আদায় করেন না কেন?

আমরা তো ঘুস খাই, আমাদের নামায কবুল হবে?


সারল্য হোক বা অজ্ঞতা, লোকটির অভিব্যক্তি হুজুরকে বিহ্বল করেছে।

বললেন, আল্লাহর দয়া সিমাহীন। বান্দাকে তিনি মাফ করতে পছন্দ করেন। নামায শুরু করুন। ইনশাআল্লাহ, অন্য পাপ থেকেও বাঁচা সহজ হয়ে যাবে।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: