খেলাচ্ছলে নিষ্ঠুরতা শিখছে শিশুরা
প্রকাশিত: ১১:২৬, ১২ ডিসেম্বর ২০২০
চার বছরের শিশু সাফির বাবার সঙ্গে খেলনা পিস্তল দিয়ে খেলছে। বাবা জানান, সাফিরের পিস্তল খুব পছন্দ। দোকানে গেলেই সে বিভিন্ন ধরনের পিস্তল, বন্দুক, গুলি এসব পছন্দ করে। বাবা রায়হান হোসেন শিশুর এই মারণাস্ত্র দিয়ে খেলাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন না। তিনি বলেন, শিশু যা চায়, তাই কিনে দিই। এখানে খারাপের কী আছে!
ঘটনা দুই :ছেলে রাহুলের প্রতি গোস্সা করেছেন তার মা। বিষয়টা জানতে চাইলে, রাহুল বলে, আমি একটা পা-কাটা মানুষের ছবি এঁকেছি। তাই মা ভয় পেয়েছে, আমার ওপর রাগ করেছে। রাহুলের মা বলেন, আমি এখনো কোনো বিকলাঙ্গ মানুষের দিকে তাকাতে পারি না। আর আমার ছয় বছরের ছেলে কিনা পা-কাটা মানুষের ছবি আঁকছে। মনে মনে এমন বিভত্সতার চিন্তা কোথা থেকে এলো, তাই ভাবছি।
শুধু সাফির কিংবা রাহুল নয়, শিশুরা এখন এমন সব দেশি-বিদেশি ধারালো অস্ত্র ও মারণাস্ত্রের আদলে তৈরি খেলনা দিয়ে খেলছে। এসব খেলনা তাদের নিষ্ঠুর করে গড়ে তুলতে সাহায্য করছে। ওসব খেলনায় শিশু শিখছে সহিংসতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব খেলনা দিয়ে খেলাচ্ছলেই নিষ্ঠুরতা শিখছে শিশুরা। খেলনা অস্ত্র দিয়ে খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে আসল অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। অভিভাবকরা এটাকে নিছক খেলনা ভেবে শিশুর হাতে তুলে দিলেও প্রযুক্তির কারণে কোন অস্ত্রের কী ব্যবহার, তা সহজে জেনে যাচ্ছে শিশু।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধারালো মারণাস্ত্রের আদলে তৈরি খেলনাসামগ্রী অনেক শিশুর আচরণে পরিবর্তন আনে। এটা করতে দেওয়া উচিত নয়। এতে শিশু সহিংস হয়ে ওঠে। এমনকি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাও এসব খেলনা ব্যবহার করেই তাদের অভিযান সফল করছে বলে অভিযোগ আছে। খেলনার পাশাপাশি রয়েছে সহিংস কনটেনট-নির্ভর বিভিন্ন ভিডিও গেমস। এসব গেমের প্রভাবে শিশু বিকৃত লাশ বা মাথাকাটা মানুষের ছবি দেখে ভীত হচ্ছে না।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
মন্তব্য করুন: