শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৫ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

করোনার বছরটা ছিল তথ্যপ্রযুক্তির

 প্রকাশিত: ১০:১৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

করোনার বছরটা ছিল তথ্যপ্রযুক্তির

 ২০২০ সাল ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের আগ্রাসনের বছর হিসেবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পাশাপাশি করোনার সঙ্গে অন্য যে বিষয়টি টক্কর দিয়েছে সেটি হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তথা আইসিটি ও টেলিকম খাত।

দেশে মার্চের শেষদিকে করোনার কারণে জারি হয় লকডাউন। কোনোরকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই সব সময় ছুটে চলা জীবনের এমন হঠাৎ থমকে যাওয়ার মুহূর্তে হাল ধরে প্রযুক্তি মাধ্যম। বলা যায়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ‘লাইফলাইন’ হয়ে ওঠে প্রযুক্তিগত সমাধানগুলো।

 

ওয়ার্ক ফ্রম হোম
করোনার কারণে পুরো ১৮০ ডিগ্রি পরিবর্তন আসে অফিস সংস্কৃতিতে। বিশ্বজুড়েই জরুরি সেবার জন্য যাদের একান্তই পথেঘাটে কাজ করতে হয় তাদের বাদ দিয়ে আর সবার জন্যই শুরু হয় ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। অনেক দেশেই করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে গেলেও সেসব দেশে এখনও চালু আছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম সংস্কৃতি।

আলোচিত অ্যাপ
করোনার এই সময়ে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বেশ কয়েকটি অ্যাপ দ্রুত আলোচনায় উঠে আসে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে এসব অ্যাপের ব্যবহার। সংবাদ সম্মেলন, সাধারণ সভা, শ্রেণিকক্ষের পাঠ থেকে শুরু করে একাধিক ব্যক্তির সন্নিবেশ হয় এমন যেকোনো ভার্চ্যুয়াল আয়োজনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে ‘জুম’ অ্যাপ। জুম অ্যাপ এতটাই ব্যবহার হওয়া শুরু করে যে, স্টক মার্কেটে এর দর বাড়তে থাকে হু হু করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টক মার্কেট নাসডাক স্টক এক্সচেঞ্জে বছরের শুরুতে জানুয়ারিতে জুমের প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ৮০ মার্কিন ডলার। গেলো অক্টোবরে এর দর ওঠে ৫৫৯ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।  

এছাড়াও গুগল ক্লাসরুম, গুগল মিট, ফেসবুকের ‘রুম’ এই ফিচারগুলোও বেশ আলোচনায় উঠে আসে।

ইকমার্স
করোনা যেখানে মানবজাতির জন্য অভিশাপ সেখানে প্রযুক্তিখাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে ধরা দেয় ইকমার্স খাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দিয়ে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে দেশে পরিচালিত ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরে তৃণমূলে ইউনিয়ন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দিতে পেরেছে ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। ইকমার্স সেবার গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারও এটিকে ‘জরুরি সেবা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।

প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বে প্রযুক্তিখাতের যে উন্নয়ন ও প্রসার হতো তা এক করোনার বছরেই হয়ে গেছে। চাহিদাই যখন উদ্ভাবনের তাগিদ তখন করোনার সময়ে ব্যাপক চাহিদা দেখা দিয়েছে প্রযুক্তিগত সমাধানগুলোর। আর সেই চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে উন্নয়ন, প্রসার ও ব্যাপ্তি ঘটেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের; বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারের।

শুধু বাংলাদেশের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এবছর ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ব্যবহৃত হচ্ছে সাড়ে নয়শ থেকে এক হাজার জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ। প্রায় একই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ চাহিদা থাকা মোবাইল ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ১০০ জিবিপিএস। চাহিদা মেটাতে এবং পার্শ্ববর্তী দেশে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে বছরের শেষ দিকে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার।

ইন্টারনেটের সামগ্রিক ব্যহবহারের ফলে ই-কমার্স তথা অনলাইনে কেনাকাটা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। মোবাইল ব্যাংকিং খাতে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে অন্তত ৫০ লাখ।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: