করোনা থাকবে আরও দু’তিন বছর: স্বাস্থ্যের ডিজি
প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১৮ জুন ২০২০
করোনাভাইরাস থেকে শিগগিরই মুক্তি মিলছে না দেশবাসীর – এমন আশংকাই প্রকাশ পেলো স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও দুই থেকে তিন বছর স্থায়ী হতে পারে, যদিও এর মাত্রা কমতে পারে।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) এ কথা বলেন তিনি। এদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে শুরুতেই অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। তিনি জানান, তিনি নিজে করোনা সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দীর্ঘদিন। সেরে ওঠার পর বৃহস্পতিবারই প্রথম বুলেটিন প্রকাশের সময় ফেসবুকে আসেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে প্রাদুর্ভাবের পর গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী ধরা পড়ে। এর একশ’ দুই দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায়।
তিনি বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিস্থিতি বিবেচনা করে করোনা পরিস্থিতি এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হচ্ছে না।
ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'বাংলাদেশ একটি জনবহুল ও অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। করোনাভাইরাসও অত্যন্ত ছোঁয়াচে ভাইরাস। এ কারণে অসতর্ক চলাফেরা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে না চললে সংক্রমণের হার মোকাবিলা করা কঠিন। এদিকে দীর্ঘদিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখলে কর্মহীনতা, আয় রোজগারের পথ বন্ধ হওয়াসহ অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক কারণেও ব্যাপক অপুষ্টিজনিক রোগবালাইয়ে অনেক মৃত্যু ঘটতে পারে। সে কারণে জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলা পর্যায় পর্যন্ত আরটিপিসিআর পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব সম্প্রসারিত হবে। এছাড়া করোনার সহজ পরীক্ষা ব্যবস্থাও চালু করা হবে। একই সঙ্গে উপজেলাতে পরীক্ষা চালুর প্রচেষ্টা নেওয়া হবে।'
ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'সব জেলা হাসপাতালে আইসিইউ, হাই ফ্লো নোজাল কেনোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটরসহ অন্যান্য সুবিধা দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার কিট ও পিপিইর যেন কোনো অভাব না হয় সেজন্যও পরিকল্পিতভাবে সংগ্রহ ও সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতাল কোভিড ও নন-কোভিড রোগীর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, 'যতদিন কোভিড থাকবে ততদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। অবহেলা বা অসাবধানতা নিজেরই ক্ষতি করবে। লক্ষণ থাকলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যাদের বয়স বেশি ও অন্যান্য রোগ (উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, শ্বাসতন্ত্রের রোগ) রয়েছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। তাই তাদের বেশি সাবধান থাকতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।'
চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, 'করোনা সন্দেহ হলে পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবে। যে কোনো মূল্যে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে হবে।'
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
মন্তব্য করুন: