বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৪ ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

কওমি শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও সাধারণ শিক্ষার সুযোগ দেবে সরকার

 প্রকাশিত: ১২:২৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

কওমি শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও সাধারণ শিক্ষার সুযোগ দেবে সরকার

বেকারত্ব নিরসনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে কর্মমুখী শিক্ষার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রায় প্রায় ১৭ লাখ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর জন্য কর্মমুখী, সাধারণ শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে চায় সরকার। শিক্ষার্থীদের কারিগরিসহ কোর কারিকুলাম অনুযায়ী লেখাপড়ার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এই উদ্যোগে।

সরকারের এই উদ্যোগের প্রতি কওমি মাদ্রাসার অনেকের সম্মতিও রয়েছে। তবে আলেমদের পক্ষ থেকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব ও আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কওমিয়্যাহর সদস্য মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারের এই উদ্যোগ ভালো। তবে কওমি আলেমদের সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে পদক্ষেপগুলো নেওয়া যায় তার ব্যবস্থা নিতে হবে। চাপিয়ে দিয়ে নয়, আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  সরকারের উদ্দেশ্য ভালো তা বোঝানোর প্রয়োজন রয়েছে।’

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে এগুতে চাই। ১৭ লাখ শিশু-কিশোরকে পেছনে ফেলে রেখে এমরা এগুতে চাই না। তারা তাদের নির্দিষ্ট পেশায় থাকলে সবার কর্মসংস্থান হবে না। তাই তাদের সঙ্গে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তারা আসতে চায়নি। এখন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাদের একটা অংশ আসতে চাইছে। তারা আসবে ইনশাল্লাহ। ’

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারাও আমাদের সন্তান। বেশিরভাগ দরিদ্র বাবা-মা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে উপার্জনের জন্য বিনা পয়সায় কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কর্মহীন জীবন চান না, সে জন্যই তাদের কর্ম নিশ্চিত করা প্রয়োজন রয়েছে।’

কর্মমুখী ও উচ্চশিক্ষার বিষয়ে পদক্ষেপ জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বর্তমানে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কারিগরির বিস্তার করছি। কাজেই ওরাও আসবে। তবে এই পরিবর্তন তাড়াতাড়িই হবে না। ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা একমুখী শিক্ষায় নিয়ে আসছি। শিক্ষাকে একমুখী করার আমাদের প্রস্তাবকে সবাই যুক্তি সঙ্গত মনে করছে।’

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এত রকম কারিকুলামের শিক্ষায় মাদ্রাসা বিলুপ্ত করতে পারবো না। এত রকম কারিকুলামের স্কুলও বিলুপ্ত করে দিতে পারবো না। যা করতে পারি তা হচ্ছে—একটি কোর কারিকুলাম সবাই পড়াবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির জন্য কোর বিষয়ের ওপর ভর্তি পরীক্ষা নিলেই হয়ে যাবে। সবাই উচ্চশিক্ষারও সুযোগ পাবেন।’

জানতে চাইলে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘সরকার যদি শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে চায় তাহলে আলেম নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, প্রয়োজনে সেমিনার করা যতে পারে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে আলেমদের দিক থেকে প্রস্তাবনা আসলে ভালো হবে। যেনও কেউ ভুল না বোঝেন।’

মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা আরবি জানে। অনেক দেশ রয়েছে যেখানে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আরবি ভাষা জানা দরকার। সরকারকে আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম আউটসোর্সিংয়ে মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা। সেটি হলে জাতীয় অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স যেমন আসবে, তেমনি শিক্ষার্থীরাও বেকার থাকবে না।’

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: