শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৫ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

কুরআন ও সুন্নাহয় কুরবানী

 প্রকাশিত: ২১:৩২, ২৮ জুন ২০২০

কুরআন ও সুন্নাহয় কুরবানী

[প্রবন্ধটি  প্রথম ছাপা হয়েছিল আলকাউসারের ‘যিলকদ-যিলহজ্ব ১৪২৮ হি., ডিসেম্বর ’০৭ সংখ্যায়। প্রাসঙ্গিক বিবেচনা করে বর্তমান সংখ্যায় কুরবানী বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহর বিধান ও ভাষ্য অংশটি পুনর্মুদ্রণ করা হল।-সম্পাদক]
বর্তমান প্রবন্ধে কুরআন হাদীস থেকে কুরবানীর দলীলসমূহ কিছুটা

বিস্তারিতভাবে পেশ করা হয়েছে। কুরবানীর মত একটি স্বতঃসিদ্ধ ওয়াজিব আমল সম্পর্কে যা শাআয়েরে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত, এই দীর্ঘ ও গবেষণাধর্মী আলোচনার প্রয়োজন হওয়াটাও অতি দুর্ভাগ্যের বিষয়।

যিলহজ্ব শব্দটির আরবী উচ্চারণ যুলহিজ্জাহ। বাংলায় ‘যিলহজ্ব’ উচ্চারণে প্রসিদ্ধ। এই মাস ‘আশহুরে হুরুম’ তথা সম্মানিত চার মাসের অন্তর্ভুক্ত। এই পূর্ণ মাস, বিশেষত প্রথম দশ দিন অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দুটি আমল হজ্ব ও কুরবানী এ মাসেই আদায় করা হয়। হজ্ব হচ্ছে ইসলামের অন্যতম রোকন। তদ্রূপ কুরবানীও ইসলামের অন্যতম নিদর্শন। এ থেকেও এ মাসের গুরুত্ব অনুধাবন  করা যায় ।

আলকাউসারের যিলহজ্ব ১৪২৬ হিজরী, জানুয়ারি ২০০৬ঈ. সংখ্যায় ‘যিলহজ্ব মাস : ফযীলত ও করণীয়’ শিরোনামে মোটামুটি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে কিছু লিখছি না। শুধু এটুকু আরয করছি যে, অন্তত হজ্ব ও কুরবানীর এই মাসে আমাদের হৃদয় বাইতুল্লাহ ও মিনা-আরাফার স্মরণে উদ্বেলিত হওয়া উচিত। দূর দেশে অবস্থানের যন্ত্রণা নিয়ে দুআ করা উচিত যে, ইয়া আল্লাহ! যে ভাইদের হজ্বে যাওয়ার তাওফীক হয়েছে তাদেরকে হজ্বে মাবরূর নসীব করুন, তাদের সকল কাজ সহজ করে দিন এবং তাদেরকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন। আর আমরা যারা বাইতুল্লাহ থেকে দূরে, তাদেরকে সেখানে যাওয়ার তাওফীক দান করুন এবং বার বার উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য দান করুন।

আরাফার দিন আল্লাহর রহমতের সাগরে জোয়ার আসে এবং সেদিন তিনি হাজ্বীদের ক্ষমা করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরওয়ানা দান করেন। সেদিন তাদের ওসীলায় অন্য অনেক সৌভাগ্যবানও মাগফিরাতের নেয়ামত লাভ করেন। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই এই তামান্না থাকা উচিত  যে, সেই সৌভাগ্যবানদের তালিকায় আমার নামটিও যেন এসে যায়। পাশাপাশি এই চিন্তাও সদাজাগ্রত রাখা উচিত যে, এখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফেরাতের বারিধারা বর্ষিত হচ্ছে। অতএব সতর্ক থাকা চাই এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকা চাই। আল্লাহ না করুন, রহমত ও মাগফেরাতের এই মৌসুমেও উদাসীনতার কারণে যদি বঞ্চিত থাকা হয় তবে তা হবে অতি দুর্ভাগ্যের বিষয়।

বাইতুল্লাহর হজ্ব

হজ্বের বিধান ও তাৎপর্য সম্পর্কে অনেক লেখা হয়েছে। ইতিপূর্বে আলকাউসারেও একাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এখানে আমি শুধু হজ্বের তালবিয়া সম্পর্কে একটি কথা আরয করব।

হজ্বের মধ্যে হাজীদের সার্বক্ষণিক অযীফা হল-

لَبَّيْكَ اللّهُمَّ لَبَّيْكْ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكْ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَ شَرِيْكَ لَكْ.

নিয়ত ও তালবিয়া-পাঠের মাধ্যমে ইহরামের সূচনা হয়। তালবিয়ার মর্ম নিয়ে সামান্য চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে, এতে ঈমান, ইহসান, তাওহীদ, তাফবীয, শোকর, তাওয়াক্কুল ইত্যাদি সব-কিছুই বিদ্যমান রয়েছে। ঈমানের সর্বশ্রেষ্ঠ পর্যায় হল ‘তাফবীয ও ইহসান’ অর্থাৎ নিজেকে ও নিজের সকল বিষয়কে আল্লাহ তাআলার হাওয়ালা করে দেওয়া এবং এই অনুভূতির সঙ্গে জীবনযাপন করা যে, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর সামনে উপস্থিত। এটাই তালবিয়ার মর্মবাণী। ঈমানের এই অবস্থা সৃষ্টি করা এবং এই পর্যায়ে উপনীত হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা আমাদের কর্তব্য। শুধু হাজ্বী সাহেবানের কর্তব্য নয়, সবার কর্তব্য। শুধু হজ্ব-মৌসুমের কর্তব্য নয়, সারা জীবনের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দিন। আমীন।

কুরবানী

কুরবানী ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং বিশেষ ধরনের ইবাদত। কুরবানীর একটি ইসলামী ধারণা এবং একটি জাহেলি ধারণা রয়েছে। জাহেলি ধারণা হল, কোন মূর্তি বা দেব-দেবীর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কিংবা জিন-শয়তান বা কোন অশুভ শক্তির কাল্পনিক অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাদের উদ্দেশ্যে কোন কিছু উৎসর্গ করা। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কুসংস্কার এবং সম্পূর্ণ শিরক ও হারাম। তাওহীদের ধর্ম ইসলামে এর কোনো অবকাশ নেই।

পক্ষান্তরে ইসলামে কুরবানীর অর্থ হল, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য শরীয়তনির্দেশিত পন্থায় শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত কোন প্রিয় বস্ত্ত, আল্লাহ তাআলার দরবারে পেশ করা এবং শরীয়ত-নির্দেশিত পন্থায় তা ব্যবহার করা।

এই কুরবানী আদম (আ.)-এর যুগ থেকে বিদ্যমান রয়েছে। সূরা মায়েদায় (আয়াত ২৭-৩১) আদম (আ.)-এর দুই সন্তানের কুরবানীর কথা এসেছে।  প্রত্যেক নবীর শরীয়তে কুরবানীর পন্থা এক ছিল না। সবশেষে  সকল জাতি ও ভূখন্ডের জন্য এবং কেয়ামত পর্যন্ত সবার জন্য যে নবী প্রেরিত হয়েছেন অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর প্রতি নাযিল হয়েছে সর্বশেষ ও চিরন্তন শরীয়ত, কুরআন ও সুন্নাহর শরীয়ত। এ শরীয়তে কুরবানীর যে পন্থা ও পদ্ধতি নির্দেশিত হয়েছে তার মূল সূত্র ‘মিল্লাতে ইবরাহীমী’তে বিদ্যমান ছিল। কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীস থেকে তা স্পষ্ট জানা যায়। এজন্য কুরবানীকে ‘সুন্নতে ইবরাহীমী’ নামে অভিহিত করা হয়।

ফার্সি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় ‘কুরবানী’ শব্দটি আরবী ‘কুরবান’ শব্দের স্থলে ব্যবহৃত হয়। ‘কুরবান’ শব্দটি ‘কুরব’ মূলধাতু থেকে নির্গত, যার অর্থ হচ্ছে নৈকট্য। তাই আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য শরীয়তসম্মত পন্থায় আদায়কৃত বান্দার যেকোন আমলকে, আভিধানিক দিক থেকে ‘কুরবান’ বলা যেতে পারে। তবে শরীয়তের পরিভাষায় ‘কুরবান’ শব্দের মর্ম তা-ই, যা উপরে উল্লেখিত হয়েছে। ইসলামী শরীয়তে এই পারিভাষিক অর্থে দু ধরনের কুরবানী রয়েছে।

১. যা হজ্বের মৌসুমে নির্ধারিত স্থানে (মক্কা ও মিনায়) হজ্ব ও উমরা আদায়কারীগণ আদায় করে থাকেন। তা ‘কিরান’ বা তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওয়াজিব কুরবানী হতে পারে কিংবা ‘ইফরাদ’ হজ্বকারীর নফল কুরবানী। হাজ্বী নিজের সঙ্গে করে নিয়ে আসা ‘হাদি’ হতে পারে কিংবা হজ্ব আদায়ে অক্ষম হওয়ার বা কোন নিষিদ্ধ কর্মের জরিমানারূপে অপরিহার্য কুরবানী। তদ্রূপ মান্নতের কুরবানী হতে পারে কিংবা দশ যিলহজ্বের সাধারণ কুরবানী। এ কুরবানীর বিধান মৌলিকভাবে এসেছে সূরা হজ্ব ২৭-৩৭, সূরা বাকারা ১৯৬, সূরা মায়েদা ২, ৯৫-৯৭, সূরা ফাতহ ২৫-এ। আর হাদীস শরীফে তা

বিস্তারিতভাবে উল্লেখিত হয়েছে।

২. সাধারণ কুরবানী, যা হজ্ব-উমরার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এবং এ কুরবানীর স্থানও নির্ধারিত নয়। তবে সময় নির্ধারিত। যে তারিখে হজ্ব আদায়কারীগণ মিনা-মক্কায় কুরবানী করে থাকেন, সে তারিখে অর্থাৎ যিলহজ্বের দশ, এগারো ও বারো তারিখে এ কুরবানী হয়ে থাকে। পৃথিবীর সকল মুসলিম পরিবারের জন্য; বরং প্রত্যেক মুকাল্লাফ মুসলমানের জন্য এই কুরবানীর বিধান রয়েছে। কারো জন্য ওয়াজিব, কারো জন্য নফল।

এ কুরবানীর উল্লেখ এসেছে সূরা আনআমের ১৬১-১৬৩ আয়াতে এবং সূরা কাউসারের ২ আয়াতে। আর

বিস্তারিত বিধি-বিধান রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহতে।

৪. সূরা আনআমে আছে-

قُلْ إِنَّنِي هَدَانِي رَبِّي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ دِينًا قِيَمًا مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ * قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ * لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ

 ‘আপনি বলে দিন, আমার প্রতিপালক আমাকে পরিচালিত করেছেন সরল পথের দিকে, এক বিশুদ্ধ দ্বীনের দিকে। অর্থাৎ একনিষ্ঠ ইবরাহীমের মিল্লাত (তরীকা), আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। আপনি বলুন, নিঃসন্দেহে আমার সালাত, আমার নুসুক এবং আমার জীবন এবং আমার মৃত্যু- সমস্ত জগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই। আর ওই বিষয়েই আমাকে আদেশ করা হয়েছে। সুতরাং আমি হলাম আত্মসমর্পণকারীদের প্রথম।’

এ আয়াতে نُسُكٌ শব্দটি বিশেষ মনোযোগের দাবিদার। نَسِيْكَةٌ শব্দের বহুবচন, যার অর্থ হল আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য আল্লাহর নামে জবাইকৃত পশু। এজন্য আরবী ভাষায় এবং শরীয়তের পরিভাষায়ও কুরবানীর স্থানকে            مَنْسِكٌ বলা হয়। আরবী ভাষার ছোট, বড় নতুন-পুরাতন যেকোন অভিধানে এবং লুগাতুল কুরআন, লুগাতুল হাদীস, লুগাতুল ফিকহের যেকোন নির্ভরযোগ্য কিতাবে نُسُكٌ  শব্দের উপরোক্ত অর্থ পাওয়া যাবে। দৃষ্টান্তস্বরূপ কিছু প্রাচীন গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিচ্ছি- ‘আসসিহাহ’ ৪/১৬১২; লিসানুল আরব ১৪/১২৭-১২৮; তাজুল আরূস ৭/২৮৭; আলমুফরাদাত ফী গারীবিল কুরআন ৮০২; আননিহায়া ফী গারীবিল হাদীসি ওয়াল আছার ৫/৪৮; মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার ৪/৭১৪-৭১৫; আলমিসবাহুল মুনীর ফাইয়ুমী ৩১১; আলমুগরিব, মুতাররিযী ২/৩০০

সূরা বাকারার ১৯৬ আয়াতেও এ শব্দটি একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

উপরোক্ত আয়াতের অর্থ পরিষ্কার। হযরত ইবরাহীম (আ.)কে যে খালেছ তাওহীদ ও সিরাতে মুস্তাকীমের প্রত্যাদেশ আল্লাহ তাআলা করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিও তা নাযিল করেছেন এবং তাঁকে আদেশ করেছেন যে, বল, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সব আল্লাহর জন্য।

উল্লেখ্য, আরবী ভাষায়  نُسُكٌ শব্দটি ইবাদতের অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এজন্য ইবাদতকারীকে نَاسِكٌ ও ইবাদতের পদ্ধতিকে  منسكবলা হয়। সূরা আনআমের উক্ত আয়াতে যদি نُسُكٌ শব্দের অর্থ ইবাদত করা হয়, তবুও তাতে কুরবানী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক হাদীসে ঈদুল আযহার কুরবানীকে نُسُكٌ বলেছেন। কুরবানীর পশু জবাই করার সময় যে দুআ পড়ার কথা হাদীসে এসেছে, তাতেও ওই আয়াত রয়েছে। হাদীসটি নিচে উল্লেখ করা হল।

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন দু’টি দুম্বা জবাই করেছেন। তিনি সময় যখন সেগুলোকে কেবলামুখী করে শায়িত করলেন তখন বললেন-

إِنِّيْ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَىْ مِلَّةِ إِبْرَاهِيْمَ حَنِيْفًا مُّسْلِمًا وَّمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ، إِنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، لا شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ، بِسْمِ اللهِ وَاللهُ أَكْبَرُ اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَّأُمَّتِهِ.

-সুনানে আবু দাউদ ৩/৯৫, হাদীস ২৭৯৫; মুসনাদে আহমদ ৩/৩৭৫, হাদীস ১৫০২২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ২৮৯৯

কুরবানীর শুরুতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই আয়াত ও দুআ পড়া থেকে একদিকে যেমন প্রমাণিত হয় যে, কুরবানী খালেছ ইবাদত, তেমনি একথাও প্রমাণিত হয় যে, সূরা আনআমের ১৬২ নম্বর আয়াতে ‘নুসুক’ শব্দের অর্থ ঈদুল আযহার কুরবানী কিংবা ওই শব্দে কুরবানীও শামিল রয়েছে।

অপর যে আয়াতে সাধারণ কুরবানীর উল্লেখ রয়েছে তা হল সূরা কাউসারের দ্বিতীয় আয়াত। ইরশাদ হয়েছে-

إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ * فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ * إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ *

এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এবং তাঁর মাধ্যমে গোটা উম্মতকে সালাত (নামায) ও নাহর (কুরবানীর) আদেশ দেওয়া হয়েছে।                                  

 ‘নাহর’ শব্দের মূল ব্যবহার উটের ক্ষেত্রে হলেও সাধারণত যেকোন পশু জবাই করাকেই ‘নাহ্র’ বলে। আয়াতে এমন জবাই উদ্দেশ্য, যা আল্লাহ তাআলার জন্য ইবাদত হিসাবে করা হয়। সেটা হচ্ছে হজ্ব ও উমরার কুরবানী এবং ঈদুল আযহার সাধারণ কুরবানী।

এ কুরবানীর সময় যদিও তিন দিন, অর্থাৎ যিলহজ্বের দশ, এগারো ও বারো তারিখ, তবে উত্তম দিন হল দশ তারিখ। সাধারণ এ তারিখেই অধিকাংশ কুরবানী হয়ে থাকে। এজন্য দশ যিলহজ্বের ইসলামী নাম হল ‘ইয়াওমুন নাহর’। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫০

আয়াতে নামাযের যে আদেশ, তাতে ঈদের নামাযও শামিল রয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্নাহ্র মাধ্যমে এ আয়াতে নাযিল হওয়া ইলাহী নির্দেশের অনুসরণ-পদ্ধতি বাতলে দিয়েছেন। একটি হাদীস লক্ষ করুন।

সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে বহু সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহার দিন নামায পরবর্তী খুতবায় বলেছেন, এই দিনের প্রথম করণীয় হল সালাত আদায় করা। এরপর নহর (কুরবানী) করা। যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পর নুসুক (কুরবানী) করল তার নুসুক পূর্ণ হল এবং সে মুসলিমদের পন্থা অনুসরণ করল। আর যে সালাতের আগে জবাই করল সেটা তার গোশতের প্রয়োজন পূরণ করবে; কিন্তু তা ‘নুসুক’ হিসাবে গণ্য হবে না।’

এই হাদীস বহু সহীহ সনদে বিভিন্ন হাদীসগ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে। কোথাও বিস্তারিতভাবে, কোথাও সংক্ষিপ্তভাবে। কিছু হাওয়ালা উল্লেখ করছি- সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৫১, ৯৫৫, ৯৬৫, ৯৬৮, ৫৫৪৫, ৫৫৪৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬১, ৪, ৬, ৭; মুসনাদে আহমদ ৪/২৮১-২৮২, ৩০৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫০৮; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৯৪-৪৩৯৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৯০৭, ৫৯১০, ৫৯১১

এই হাদীসে সূরাতুল কাউসারের ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল থেকে পাওয়া গেল। সূরাতুল কাউসারে বলা হয়েছে-(তরজমা) সুতরাং আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানী করুন।’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ থেকে জানা গেল যে, নামায পড়ার আদেশে ঈদের নামায এবং কুরবানীর আদেশে ঈদুল আযহার কুরবানীও অন্তর্ভুক্ত।

তদ্রূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল ও ইরশাদ থেকে একথাও স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ঈদুল আযহার কুরবানী হচ্ছে ওই ‘নুসুক’ যা সূরা আনআমের ১৬২ আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে। এটি আল্লাহ তাআলার ইবাদত হিসাবে আদায় করা হয়। এর উদ্দেশ্য গোশত খাওয়া বা গোশতের প্রয়োজন পূরণ করা নয়। তবে কুরবানী হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সে পশুর গোশত কুরবানীদাতার জন্য হালাল করেছেন এবং দশ যিলহজ্ব থেকে মোট চার দিন রোযা রাখতে নিষেধ করে যেন তাঁর মেহমানদারী কবুল করার আদেশ দিয়েছেন।

ঈদুল আযহার দিবস মুসলমানদের জন্য খুশির দিবস। তবে এই খুশির তাৎপর্য হচ্ছে আরাফা-দিবসের সাধারণ ক্ষমা, আল্লাহর দরবারে কুরবানী পেশ করার সৌভাগ্য এবং আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়া কুরবানী থেকে মেহমানদারি লাভ। বলাবাহুল্য, এই তাৎপর্য অনুধাবন করার জন্য অন্তরে ঈমানের মিষ্টতা এবং খালিক ও মালিকের প্রতি মহববত ও ভালবাসা থাকতে হবে। বস্ত্তবাদী ও যুক্তিপূজারী অন্তর দুঃখজনকভাবে এই নেয়ামত থেকে বঞ্চিত।

সুন্নাহর আলোকে কুরবানী

এ পর্যন্ত শুধু কুরআন মজীদ থেকে আলোচনা করা হল। যদি এ বিষয়ের ‘সহীহ’ ও ‘হাসান’ হাদীসগুলো একত্র করা হয় তবে একটি বৃহৎ গ্রন্থ তৈরি হবে। শুধু সহীহ ইবনে হিববানের ‘কিতাবুল উয্হিয়া’ বা কুরবানীর অধ্যায়টি হাদীসের ধারাবাহিক ক্রমিক নং অনুসারে ৫৮৯৭ থেকে ৫৯৩৩ পর্যন্ত বিস্তৃত। এগুলোতে সামান্য কিছু হাদীসের পুনরুল্লেখ রয়েছে। পক্ষান্তরে এ কিতাবের বাইরেও আরো সহীহ হাদীস অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।

উপরের হাদীসগুলো ছাড়া আরো কয়েকটি হাদীস পেশ করছি।

১. উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কুরবানীর ইরাদাকারী যিলহজ্বের চাঁদ দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর যেন তার নখ, চুল না কাটে কুরবানী করা পর্যন্ত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৭৭/৩৯-৪২; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৯১; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬২-৪৩৬৪; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৮৯৭, ৫৯১৬, ৫৯১৭

২. আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে এসেছে যে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে দ্বীন সম্পর্কে জানতে এসেছিল। ফিরে যাওয়ার সময় নবীজী তাকে ডাকলেন এবং বললেন-

أمرت يوم الأضحى جعله الله عيدا لهذه الأمة

‘‘আমাকে ‘ইয়াওমুল আযহার’ আদেশ করা হয়েছে। (অর্থাৎ এ দিবসে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে।) এ দিবসকে আল্লাহ এ উম্মতের জন্য ঈদ বানিয়েছেন। লোকটি বলল, আমার কাছে যদি শুধু পুত্রের দেওয়া একটি দুধের পশু থাকে আমি কি তা-ই কুরবানী করব? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, না, বরং তুমি সেদিন তোমার মাথার চুল কাটবে (মুন্ডাবে বা ছোট করবে) নখ কাটবে, মোচ কাটবে এবং নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর নিকট তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।’’ -মুসনাদে আহমদ ২/১৬৯; হাদীস ৬৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৭৭৩, ৫৯১৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬৫

৩. আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করল না (অর্থাৎ তার কুরবানী করার সংকল্প নেই) সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে।’-মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম ৪/২৩১, হাদীস ৭৬৩৯

৪. আলী (রা.) বলেন-

أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نستشرف العين والأذن وأن لا نضحي بمقابلة ولا مدابرة ولا شرقاء ولا خرقاء

‘আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন, আমরা যেন (কুরবানী পশুর) চোখ ও কান ভাল করে দেখে নিই এবং কান-কাটা, কান-চেরা বা কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশু দ্বারা কুরবানী না করি।’ -মুসনাদে আহমদ ১/৮০, ১০৮, ১৪৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ২৯১৪-২৯১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৮০৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৭৩-৪৩৭৪

৫. বারা ইবনে আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

أربع لا يضحى بهن : العوراء البين عورها، والمريضة البين مرضها، والعرجاء البين ظلعها، والعجفاء التي لا تنقي.

‘চার ধরনের পশু দ্বারা কুরবানী করা যায় না- যে পশুর চোখের জ্যোতি ক্ষতিগ্রস্ত, যে পশু অতি রোগা, যে পশু খোঁড়া আর যে পশু অতি শীর্ণকায়।’ -মুয়াত্তা মালিক ২/৪৮২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৯১৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৭০-৪৩৭১; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪৯৭

কুরবানী সম্পর্কে আরো অনেক হাদীস ও আছার আছে। এখানে তা সংকলন করা আমার উদ্দেশ্য নয়, আমি শুধু আরেকটি হাদীস উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গ সমাপ্ত করছি।

আম্মাজান আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানী করার জন্য একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা আনতে বললেন, যার পা কালো, পেটের চামড়া কালো এবং চোখ কালো। দুম্বা আনা হলে নবীজী বললেন, আয়েশা, আমাকে ছুরি দাও। এরপর বললেন, একটি পাথরে ঘষে ধারালো করে দাও। তিনি ধারালো করে দিলেন। এরপর তিনি ছুরি হাতে নিলেন এবং দুম্বাটিকে মাটিতে শোয়ালেন। এরপর বিসমিল্লাহ বলে জবাই করলেন এবং বললেন-

اَللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَّآَلِ مُحَمَّدٍ وَّمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ

‘ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে, মুহাম্মাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এবং মুহাম্মাদের উম্মতের পক্ষ থেকে কবুল করুন।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬৭; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৯১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৯২

অন্য হাদীসে আছে, কুরবানীর পশু জবাই করার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুআ পড়েছেন-

بِسْمِ اللهِ، اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ، اَللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ

‘আল্লাহর নামে; ইয়া আল্লাহ! তোমার নিকট থেকে এবং তোমার উদ্দেশ্যে; ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন।’ -আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ১১৩২৯; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৪/২১

মোটকথা, পূর্ণ তাওহীদ ও ইখলাসের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো পদ্ধতিতে আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার আশা নিয়ে কুরবানী করা উচিত। আল্লাহ তাআলার আদেশ পালন করে কবুল হওয়ার প্রত্যাশা এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মেহমানদারীর সৌভাগ্য লাভের অনুভূতি বান্দার মধ্যে আনন্দও সৃষ্টি করে। আর এটাই হচ্ছে ঈদুল আযহার মর্মবাণী। কুরবানীর সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুআ

اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ

‘ইয়া আল্লাহ! তোমার নিকট থেকে এবং তোমারই উদ্দেশ্যে’ সম্পর্কে  চিন্তা-ভাবনা করলে খুব সহজেই বোঝা যায়, কুরবানীর হাকীকত কী। আল্লাহ-প্রদত্ত রিযিক ও আল্লাহর নেয়ামত আমরা লাভ করেছি, আর আল্লাহর হুকুমে তা কুরবানীরূপে তাঁর দরবারে পেশ করার সৌভাগ্য হয়েছে। অতপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মেহমানদারী হিসাবে তা গ্রহণ করার নির্দেশনা পেয়েছি।

বলাবাহুল্য, কুরবানী নামায রোযার মতো ফরয আমল নয়, তবে এটি অন্যান্য সুন্নতে মুয়াক্কাদার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব আমল। সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত কুরবানী করেছেন, কোন বছর বাদ দেননি। (আলইস্তিযকার, ইবনে আব্দিল বার ১৫/১৬৩-১৬৪)

তদ্রূপ কখনো কখনো কুরবানী করার জন্য সাহাবীদের মধ্যে কুরবানীর পশু বণ্টন করেছেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫৫

আর হযরত আলী (রা.)কে আদেশ করেছেন (ইন্তেকালের পরেও) তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করতে। তাই তিনি প্রতি বছর নিজের কুরবানীর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকেও কুরবানী করতেন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮৪৩, ১২৭৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৭

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত উম্মতের মধ্যে এই ইবাদত ‘তাওয়ারুছ’ ও ‘তাওয়াতুর’এর সাথে চলমান রয়েছে এবং প্রতিবছর ‘শিয়ার’রূপে (ইসলামের একটি প্রকাশ্য ও সম্মিলিতভাবে আদায়যোগ্য ইবাদত হিসাবে) তা আদায় করা হয়েছে। অতএব কেউ যদি মনে করে, কুরবানী ইবাদত নয় এবং ইসলামী শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে সে শরীয়ত অস্বীকারকারী।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: