বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৪ ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি রহ.: জীবন ও কর্ম

 প্রকাশিত: ১৯:২৯, ১৯ মে ২০২০

মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি রহ.: জীবন ও কর্ম

মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি গুজরাটের বেনাস কাঁথা জেলার কালেদা গ্রামে ১৩৬২ হিজরি মোতাবেক ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতামাতা তাঁর নাম ‘আহমদ’ রাখেন। তিনি শিক্ষালাভের উদ্দেশে মাজাহেরুল উলুম সাহারানপুরে ভর্তি হন, এবং ভর্তি রেজিস্ট্রি খাতায় নিজের নাম ‘সাঈদ আহমদ’ লেখেন। পরবর্তীতে তিনি এ নামেই প্রসিদ্ধি লাভ করেন।

বাবার কাছেই তাঁর হাতেখড়ি হয়। তিনি নিজ গ্রামে তাঁর নাজেরা ও দ্বীনিয়্যাত শিক্ষা অর্জন করেন। এরপর তিনি তাঁর মামা মাওলানা আব্দুর রহমান রহ. এর মাদরাসা দারুন উলূম চাপিতে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ছয় মাস ধরে ফারসি ভাষা রপ্ত করেন ও এ ভাষায় লিখিত বিভিন্ন কিতাব অধ্যয়ন করেন। তারপর তিনি মাওলানা নাজির আহমদ পালনপুরি রহ এর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তাঁর সম্মানিত শিক্ষকদের মধ্যে মুহাম্মদ আকবর মিয়া পালনপুরি ও মাওলানা হাশিম সাহেব বুখারি রহ. বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

হিজরি ১৩৭৭ সালে তিনি মাজাহেরুল উলুম সাহারানপুরে ভর্তি হন। সেখানে তিনি আরবি ব্যাকরণ, দর্শন ও যুক্তিশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। ১৩৮০ হিজরিতে তিনি হাদীসশাস্ত্র অধ্যয়ন করার জন্য দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। সেখানে তিনি হাদীস ও ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়নের পাশাপাশি জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবাধ বিচরণের সুযোগ লাভ করেন। মাওলানা নাসির আহমেদ খান হাফি. ছাড়া দারুন উলূম দেওবন্দে তাঁর অন্যান্য সকল শিক্ষক ইন্তিকাল করেন।

১৩৮২ হিজরি মোতাবেক ১৯৬২ সালে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে হাদীসশাস্ত্রের সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরের বছর তিনি ইফতা বিভাগে ভর্তি হন। ইফতা শেষ করার পর ১৩৮৪ সালে তিনি তৎকালীন “আলিয়া গ্রেড টিচার” হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং ১৩৯৩ হিজরি পর্যন্ত উক্ত পদে বহাল থাকেন।

পরবর্তীতে মাওলানা মানজুর নোমানী দারুল উলুম দেওবন্দে শিক্ষক হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন, এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সেখানকার শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হন। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি দেওবন্দে বুখারি ও তিরমিযী শরীফ পড়াতেন। শিক্ষকতায় তিনি অশেষ খ্যাতি লাভ করেন।

তিনি কেবলমাত্র একজন সফল শিক্ষকই নন, সাথে সাথে তিনি একজন সুলেখকও। এ যাবত তাঁর লেখা প্রায় ৩৫ টি কিতাব প্রকাশিত হয়েছে।

তাঁর প্রকাশিত কিতাবগুলোর মধ্যে আলওয়ানুল কাবির, শরহে ফওজুল কাবির, হাশিয়ায়ে ইমদাদুল ফতোয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর লিখিত হুজ্জাতুল বালিগাহ একটি সুপ্রসিদ্ধ কিতাব। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি আজীবন জ্ঞানপিপাসুদের নিকট স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকবেন।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: