শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৫ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

রোজা ও রমজান: পর্ব-৪৩: লাইলাতুল কদরের ফযিলত

মুফতি মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন

 আপডেট: ১৯:২৫, ২৭ এপ্রিল ২০২২

রোজা ও রমজান: পর্ব-৪৩: লাইলাতুল কদরের ফযিলত

লাইলাতুল কদরের অনেক ফযিলত রয়েছে। এর মধ্যে এখানে নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে কয়েকটি ফযিলতের কথা উল্লেখ করছি-
১. এই রাত্রিতে মহাগ্রন্ত্র আল-কুরআন নাযিল করা হয়েছে। 
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
‘একে নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ হযরত ইবনে আব্বাস (রাদি.)-সহ প্রমুখ সাহাবী হতে বর্ণিত আছে যে, লাইলাতুল কদরে সমগ্র কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে নাযিল করা হয়েছে। তারপর বিভিন্ন ঘটনার পরিপেক্ষিতে সুদীর্ঘ তেইশ বছরে ধীরে-ধীরে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে। ইবনে কাছির,  সূরায়ে কদরের ব্যাখ্যা।


২. লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও বেশী উত্তম। মহান আল্লাহ বলেন-
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ
‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ হযরত মুজাহিদ (রাহ.) বলেন যে, এখানে ভাবার্থ হচ্ছে: লাইলাতুল কদর ঐ হাজার মাসের সালাত, সিয়াম, ইবাদত থেকেও উত্তম, যে হাজার মাসের মধ্যে লাইলাতুল কদর নেই। ইবনে কাছির, সূরায়ে কদরের ব্যাখ্যা।


৩. মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকল গুনাহ মাফ করে দেনঃ হাদীসে এসেছে-
مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
(‘আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত) ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় কদরের রাত্রিতে ইবাদত করে, তার পূর্বের সমস্ত (ছগীরা) গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস- ১৯০১) 


৪. হযরত কাতাদা (রহ.) বলেন যে, এই রাত্রে সমস্ত কাজের ফায়সালা করা হয়। বয়স ও রিযিকের বাজেট নির্ধারণ করা হয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন-  
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
‘এই রাত্রে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।’ সূরা দুখান, আয়াত-৪ 


আল কুরআনের সুনামধন্য ভাষ্যকার আল্লামা মাহমুদ আলুসী (রাহ.) ‘তাফসীরে রুহুল মায়ানীতে’ লিখেছেন, তাকদীর বা ভাগ্য বিষয়ে তিনটি কাজ রয়েছে। প্রথম কাজ হলো, তাকদীর নির্দিষ্ট হওয়া, অর্থাৎ কিভাবে, কখন, কি ঘটবে? এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আসমান জমিন সৃষ্টির অনেক পূর্বেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

দ্বিতীয় কাজ হলো, এ তাকদীর সমূহকে লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ করিয়ে শবে-বরাতে ফিরিশতাদের নিকট প্রকাশ করা হয়। তৃতীয় কাজ হল, তাকদীর বাস্তবায়নের জন্য হযরত জিবরাঈল (আ.), হযরত মিকাঈল (আ.) হযরত ইসরাাফিল (আ.) এবং হযরত আজরাঈল (আ.) সহ আরো অন্যান্য ফিরিশতাদের উপর লাইলাতুল কদরে (শবে কদরে) দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। (তাফসীরে নূরুল কুরআন- ৩০/৩৩২) 

 

মুফতি মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন
সাতাউক মধ্যগ্রাম, লাখাই, হবিগঞ্জ
আমলের কথা জানতে ইউটিউবে সার্চ করুন, 01712961470

মন্তব্য করুন: