রোজা ও রমজান: পর্ব-৪০: লাইলাতুল কদর’ অনির্দিষ্ট রাখার রহস্য
মুফতি মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন
আপডেট: ১১:২৮, ২৬ এপ্রিল ২০২২
হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রাদি.) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে ‘লাইলাতুল কদর’ সম্পর্কে খবর দেয়ার জন্য বের হয়ে আসলেন। কিন্তু তিনি বের হয়ে দেখলেন যে, দু’জন মুসলমান পরস্পরে ঝগড়া করছে। তিনি এই অবস্থা দেখে বললেন: ‘আমি তোমাদেরকে ‘লাইলাতুল কদর’ সম্পর্কে সংবাদ দিতে এসেছিলাম। কিন্তু অমুক আর অমুকের ঝগড়ার কারণে ঐ রাত্রির বিষয়টি আমার স্মৃতি থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। সম্ভবতঃ এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
এই হাদীসের ভাবার্থ হলো এই যে, এই রাত্রির সন্ধানকারী সম্ভাব্য সারা রাত অত্যন্ত ভক্তি এবং বিনয়ের সাথে ইবাদত করবে। আর যদি এই রাত্রি সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হতো তাহলে লোকজন শুধু ঐরাত্রেই ইবাদত করতো। এইজন্য মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মহানবীর স্মৃতি থেকে এই রাতের নির্দিষ্টতাকে তুলে নিয়েছেন।
এর কয়েকটি কারণ আছে। যেমন-
১. এই রাতটি যেহেতু হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম তাই অলস ও ইবাদত ফাঁকি দেয় এমন লোকেরা সারা বছর ইবাদত ছেড়ে দিয়ে শুধু লাইলাতুল কদরে ইবাদতকে যথেষ্ট মনে করে বসে থাকতো, তাই এ রাত নির্ধারণ করা হয়নি।
২. যদি কেউ কোনো কারণবশত এই রাতে ইবাদত করতে না পারতো তবে সে দুঃখে-কষ্টে দিশেহারা হয়ে যেত। যা পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন ফরয এবং ওয়াজিব আমলে সমস্যার সৃষ্টি করতো, যার ফলে সে অনেক রহমত থেকে বঞ্চিত থাকতো। এজন্য কেউ যেন দুঃখ-কষ্ট না পায়, কারো আমলে যেন সমস্যার সৃষ্টি না হয় এবং রহমত থেকে বঞ্চিত না হয় তাই এ রাতকে নির্ধারণ করা হয়নি।
৩. যেন লোকজন রাত্রিটিকে পাবার আশায় রমযানের প্রতিটা মুহুর্তকে ইবাদতের মধ্যে লাগাতে পারে। বিশেষ করে রমযানের শেষ দশকে যেন ইবাদতের জন্য সর্বাত্বক প্রচেষ্টা করার মাধ্যমে বেশি আমল করতে পারে। তাই এ রাতকে নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এই রাত্রটিকে বোঝার কয়েকটি নিদর্শন আছে।
মুফতি মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন
সাতাউক মধ্যগ্রাম, লাখাই, হবিগঞ্জ
আমলের কথা জানতে ইউটিউবে সার্চ করুন, 01712961470
মন্তব্য করুন: