শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৫ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

রোজা ও রমজান: পর্ব-৩৮: লাইলাতুল কদরের ইতিহাস

মুফতি মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন

 আপডেট: ১৯:৩৪, ২৩ এপ্রিল ২০২২

রোজা ও রমজান: পর্ব-৩৮: লাইলাতুল কদরের ইতিহাস

লাইলাতুল কদরের ইতিহাসঃ
(ক) মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত মুজাহিদ (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বনি ইসরাঈলের এক ব্যক্তির আলোচনা করলেন। বললেন ঐ ব্যক্তি হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম আল্লাহর  রাস্তায় অস্ত্র ধারণ করেছিলেন। কখনও অস্ত্র সংবরণ করেননি। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি একনাগারে এক হাজার মাস পর্যন্ত জিহাদে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। সাহাবারা একথা শুনে বিস্মিত হলেন। এই জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ‘সূরায়ে কদর’ নাযিল করেন। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একথা  জানিয়ে দিলেন যে, ‘লাইলাতুল কদরের ইবাদত ঐ ব্যক্তির এক হাজার মাসের চেয়েও বেশী উত্তম’। মায়ারিফুল কুরআন- ৮/৮৩১; 
দুই. ইমাম ইবনে জারীর (রহ.) হযরত মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, বনি ইসরাঈলের এক লোক সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতেন। আবার সন্ধা থেকে সকাল পর্যন্ত মহান আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকতেন। তিনি এক হাজার মাস পর্যন্ত এইভাবে কাটিয়ে দেন। অতঃপর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই সূরা নাযিল করে তাঁর প্রিয় নবী (সা.) এর উম্মতকে সুসংবাদ জানিয়ে দেন যে, এই উম্মতের কোন ব্যক্তি যদি লাইলাতুল কদরে ইবাদত করে তাহলে সে বনি ইসরাঈলের ঐ ব্যক্তির চেয়েও বেশী সওয়াব পাবে। ইবনে কাছির, সূরায়ে কদরের ব্যাখ্যা।
তিন. মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত আলী ইবনে উরওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বনি ইসরাঈলের চারজন আবিদের (ইবাদতকারীর) কথা উল্লে¬খ করেন। তাঁরা আশি বছর পর্যন্ত মহান আল্লাহর ইবাদত করেছিলেন। এই আশি বছরের মধ্যে সামান্য সময়ের জন্যও তারা মহান আল্লাহর নাফরমানী করেননি। এই চারজন হলেন ‘হযরত আইউব (আ.), হযরত যাকারিয়া (আ.), হযরত হিযকিল (আ.) এবং হযরত ইউশা ইবনে নুন (আ.)।’ এ ঘটনা শুনে সাহাবায়ে কিরাম (রা.) খুবই অবাক হলেন। তখন হযরত জিবরাঈল (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর নিকট এসে বললেন: ‘হে মুহাম্মদ! (সা.) আপনার উম্মতেরা এই ঘটনা শুনে আশ্চর্য হয়েছে। আপনি জেনে রাখুন, মহান আল্লাহ আপনাকে এর চেয়েও উত্তম জিনিস দান করেছেন। আপনার উম্মত যে ব্যাপারে আশ্চর্য হয়েছে এটা তার চেয়েও অনেক উত্তম।’ এই কথা বলে হযরত জিবরাঈল (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে সূরায়ে কদর তিলাওয়াত করে শুনালেন। এতে উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম (রাদি.) অত্যন্ত খুশি হলেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরায়ে কদর নাযিল করে অন্য উম্মত থেকে এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দিলেন। মায়ারিফুল কুরআন- ৮/৮৩১; 
মুফতি মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন
সাতাউক মধ্যগ্রাম, লাখাই, হবিগঞ্জ
আমলের কথা জানতে ইউটিউবে সার্চ করুন, 01712961470

মন্তব্য করুন: