জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহত ৩০
জাপানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তীব্র শীতের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৫ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫, এর আগে ৭ দশমিক ৬ বলা হয়েছিল। সংস্থাটি আরও সতর্ক করে বলেছে, আগামী কয়েক দিনে একই রকম বা আরও বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি জানান, আওমোরি অঞ্চলের উপকূলে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পে ৩০ জন আহত হয়েছেন। যার ফলে সাগরে সর্বোচ্চ ৭০ সেন্টিমিটার (২৮ ইঞ্চি) উচ্চতার সুনামি ঢেউ সৃষ্টি হয়েছিল।
দমকল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, আহতদের মধ্যে হোক্কাইডো দ্বীপে একজন গুরুতর আহত হয়েছে।
প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, সড়কে বেশ কয়েকটি ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং অন্তত একটি গাড়ি একটি গর্তে পড়ে আছে, আর জানালার ভাঙা কাঁচ ছড়িয়ে রয়েছে রাস্তা ও ফুটপাতে।
শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি স্থানে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। সরকারি মুখপাত্র মিনোরু কিহারা মঙ্গলবার জানান, একটি বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এক এএফপি প্রতিবেদক জানান, হোক্কাইডোতে প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে মাটিতে তীব্র কাঁপন অনুভূত হয়, এ সময় বাসিন্দাদের স্মার্টফোনের অ্যালার্ম বেজে ওঠে।
হোনশু দ্বীপের আওমোরি অঞ্চলের হাশিকামির ৩৩ বছর বয়সী সরকারি কর্মচারী দাইকী শিমোহাতা এএফপি-কে বলেন, তার পরিবারসহ তিনি বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের কাঁপুনি আমরা আগে কখনও অনুভব করিনি। এটি হয়তো ২০ সেকেন্ডের মতো স্থায়ী ছিল।
জরুরি সেবা সংস্থাগুলো জানায়, ভূমিকম্পের পর প্রায় ২৮ হাজার মানুষকে বাড়িঘর ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গণমাধ্যম জানায়, কিছু অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র এরইমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে।
কিয়োডো নিউজ জানায়, প্রচণ্ড ঠান্ডায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকলেও ভূমিকম্পের পরপরই আমোরি অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার ৭০০ বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না।
তবে আজ মঙ্গলবার সকাল নাগাদ বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হয়। মাত্র ৪০টির মতো বাড়ি বিদ্যুৎবিহীন থাকে বলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়।
২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে যে সুনামি আঘাত হানে, তাতে ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হন এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে।
জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ারের পশ্চিম প্রান্তে চারটি বড় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি।