ভারতে নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে পর্যটকসহ ২৫ জনের মৃত্যু
ভারতের গোয়া রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের আরপোরা এলাকায় একটি জনপ্রিয় নৈশক্লাবে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে পর্যটকসহ অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশকে উদ্ধৃত করে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, রোববার প্রায় মধ্যরাতে একটি ‘গ্যাস সিলিন্ডার’ বিস্ফোরণে ক্লাবটিতে আগুন লাগে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের ভাষ্য অনুযায়ী, এই আগুনে বেশ কয়েকজন পর্যটক ও রান্নাঘর কর্মী মারা গেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে এক্স এ সাওয়ান্ত লিখেছেন, “গোয়ায় আমরা যারা আছি সবার জন্য আজ একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক দিন। আরপোরায় বড় ধরনের একটি অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী তার পোস্টে ২৩ জন নিহতের কথা বললেও পরে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, আরপোরার রোমিও লেনের ওই নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তাদের জানানো প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী আরও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে আর তাদের গোয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে। কর্তৃপক্ষ নিহতদের মধ্যে চারজন পর্যটক ও ক্লাবটির ১৪ জন কর্মীর পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। বাকি সাতজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার কাজ চলছে।
এনডিটিভি বলছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাত প্রায় ১টার দিকে, পুলিশ কর্মকর্তারা প্রথমে সন্দেহ করেছিলেন যে ক্লাবটির রান্নাঘরের অংশে একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। কিন্তু এ ধারণা বাতিল করা হয়েছে। গোয়া পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) জানিয়েছেন, পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে সিলিন্ডারগুলো অক্ষত আছে।
কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, বিস্ফোরণটি এত শক্তিশালী ছিল যে মুহূর্তের মধ্যে পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, এতে ভেতরে থাকা লোকজন বের হওয়ার তেমন সময় পাননি।
আগুন ছড়িয়ে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে দমকলের অনেকগুলো গাড়ি হাজির হয়। দুই ঘণ্টা ধরে চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তারপর থেকে বাকি রাত ধরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়।
নিহতদের মৃতদেহগুলো পোস্টমর্টেম পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মোট কতোজন আহত হয়েছেন আর তাদের কার কী অবস্থা তা কর্মকর্তারা তা যাচাই করে দেখছেন। উদ্ধারকাজ ও পরিদর্শন শেষ হওয়ার পর নৈশক্লাবটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
ডিজিপি জানিয়েছেন, তদন্তে ক্লাবটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগ পদ্ধতি ও জরুরি প্রস্থান পরিকল্পনা খতিয়ে দেখা হবে এটি নিশ্চিত করতে যে সেগুলোতে কোনো লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছিল কি না।