বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১১ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ঢাবি শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি প্রক্টরের অপসারণ দাবি

 আপডেট: ০৮:৫৬, ২০ অক্টোবর ২০২২

ঢাবি শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি প্রক্টরের অপসারণ দাবি

বিভাগীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে তার ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিনের অভিযোগ, সোমবার বিকেলে ঢাবির প্রক্টর কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তার বিভাগীয় কার্যালয়ে গিয়ে তল্লাশি চালান। তারা তার ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যান। এছাড়া একই দিন সন্ধ্যায় তার স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ দিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে বলে ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি লিখেছেন, ‘‘১৭ অক্টোবর ২০২২, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যকে শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি সাড়ে বারোটা -একটা নাগাদ। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ প্রক্টর অফিস থেকে দুজন কর্মচারী আমার বিভাগের অফিসে গিয়ে আমার ব্যক্তিগত ফাইল তল্লাশি করে! আমার স্থায়ী ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যায়! আমার যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আছে! সেই তথ্য যোগাড় করতে বিভাগে কেন কর্মচারী গেল আমার ব্যক্তিগত ফাইলের জন্য? কোনো তথ্য দরকার হলে তো রেজিষ্ট্রার ভবনই যথেষ্ট!''

তার প্রশ্ন, কোন ক্ষমতাবলে প্রক্টর একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত ফাইল তল্লাশি করতে তার দুজন  কর্মচারীকে আমাদের বিভাগের অফিসে পাঠিয়েছে? তাকে এই এখতিয়ার কে দিলো?

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি! সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় আমার স্থায়ী ঠিকানায় একজন এসআই গিয়ে জানায় যে, উনি আমার সম্পর্কে ভেরিফিকেশনের জন্য গেছেন। ওখান থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটা তালিকা করা হচ্ছে, সেই জন্য গেছেন! আবার জানালেন, উনার বস বলতে পারবেন আসল কারণটা কী? সবকিছু মিলিয়ে আমি নিশ্চিত, প্রক্টর তার আত্নমর্যাদাহীন এই মহাকাণ্ডটি'র সাথে আছেন। ঘটনার পরম্পরা তাই নির্দেশ করে!'

সবশেষে তিনি লিখেছেন, আমার প্রশ্ন, একজন প্রক্টর কি আসলে শিক্ষক নাকি অন্যকিছু? ভিন্ন চিন্তার নিজ সহকর্মীদেরকে কি চোর-ডাকাত মনে করেন? কোন্ আত্নমর্যাদা নিয়ে শিক্ষক হিসেবে শ্রেণি কক্ষে যান? অপরাজনৈতিক সেবাদাসের মানসিকতা নিয়ে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা কীভাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন? এই শিক্ষকেরা রাতের ঘুমানোর আগে ভালো কিছু  কি চিন্তা করতে পারেন?

তানজীমউদ্দিন খান দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের একটি অংশের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের অন্যতম সংগঠক। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে গত সোমবার ঢাবির প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীর অপসারণ দাবি করা শিক্ষকদের একজন তিনি। নেটওয়ার্কের পক্ষে গত সোমবার দুপুরে তানজীমউদ্দিনসহ কয়েকজন শিক্ষক ঢাবির প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।

তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলছেন, এটা কল্পিত মিথ্যাচার, ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মিথ্যাচার করছেন তানজীমউদ্দিন। তানজীমউদ্দিন জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে উপাচার্যকে জানাবেন। 

তানজীমউদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি করতে যে দুজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাদের একজনের নাম জানতে পেরেছে প্রথম আলো। তিনি প্রক্টর কার্যালয়ের সেকশন অফিসার রেজাউল করিম। তার বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য প্রক্টরের কথার মিল পাওয়া যায়নি বলে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। রেজাউল প্রথম আলোকে বলেন, প্রক্টরের নির্দেশেই তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন: