বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১২ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি

বাজেট ঘাটতি ও ভর্তুকি কমাতে গ্যাস ও সারের দাম সমন্বয়

 প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

বাজেট ঘাটতি ও ভর্তুকি কমাতে গ্যাস ও সারের দাম সমন্বয়

বাজেট ঘাটতি ও ভর্তুকি কমাতে এবার গ্যাস ও সারের দাম সমন্বয় করতে যাচ্ছে সরকার। করোনা মহামারির কারণে সামাজিক নিরাপত্তা-বেষ্টনীর আওতায় খরচ বাড়ায় এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, করোনা মহামারির ঘাটতি মেটাতে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সাধারণ মানুষকে নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে। এছাড়া কৃষি খাতে ভর্তুকির জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বছর শেষে এটা ২৫ হাজার কোটি টাকায় চলে যেতে পারে বলে ধারণা করছে অর্থ বিভাগ। অবশ্য ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ ৩৫ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে ফিরে গেছে। আইএমএফের প্রতিনিধি দল অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আরো কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে ভর্তুকি কমানোর তাগিদ দিয়ে গেছে। একই সঙ্গে বাজেটের ভারসাম্য রক্ষায় পরোক্ষভাবে তারা সার ও গ্যাসের দাম সমন্বয়ের কথাও বলে গেছে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ, যা গতকাল বুধবার সভায়ও আলোচনা করা হয়েছে।  

এদিকে অল্প কিছুদিন আগে বৈশ্বিক বাজারে বেশি দাম ও বাজেটে ভর্তুকি কমানোর যুক্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়েছে। যদিও এখন জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে কমছে। ভর্তুকি বাড়লে বাজেট ঘাটতিও বাড়বে। এতে বাজেটের ভারসাম্য ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই বাজেটের ভারসাম্য ঠিক রাখতে ও ভর্তুকি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সার ও গ্যাসের দাম সমন্বয় (বাড়ানোর সুপারিশ) করার কথা বলা হয়েছে।  

বর্তমান বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’ এবং ‘বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি’র বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থ বিভাগ ও বৈঠকের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, গতকাল বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীতেও উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চায় সরকার। কেননা করোনা মহামারি সত্ত্বেও গত বছর ভালো প্রবৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশ। চলতি বছর শেষেও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এজন্য আসছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির টার্গেট ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। বর্তমানে (২০২১-২২ অর্থবছর) বাজেটে এর টার্গেট ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

বৈঠকে দেশের বাজেট বাস্তবায়ন, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি, বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তাসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এতে মিশ্র মতামত ব্যক্ত করা হয়। কেননা এ মুহূর্তে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। বর্তমানে এর প্রবৃদ্ধি অক্টোবর পর্যন্ত ১৬ শতাংশ। যদিও আশা করা হচ্ছে ডিসেম্বরের পর এ গতি আরো বাড়বে। রেমিট্যান্স প্রবাহেও ধীরগতি রয়েছে। সামনে ঈদের সময় এটা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করা হয় বৈঠকে।  

একইভাবে বৈদেশিক ও ঋণ সহায়তা ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। যদিও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কিছুটা চাপ রয়েছে। অর্থ বিভাগ মনে করে এ চাপ দ্রুতই কেটে উঠবে।

মন্তব্য করুন: