রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত, হত্যাচেষ্টার অভিযোগ থানায়
রাজশাহী জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম সাজু সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
সোমবার বিকালে নগরীর বিনোদপুর এলাকায় এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় নাহিদুল বাদী হয়ে রাতে নগরীর মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে ওই থানার ওসি আবদুল মালেক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অজ্ঞাত পরিচয় ১২ থেকে ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আহত অপর দুজন হলেন- এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটির সদস্য আবদুর বারি এবং মিডিয়া সেলের সদস্য সোহানুর রহমান। গুরুতর আহত আবদুর বারিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর নাহিদুল ও সোহান চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ও মেডিকেল অফিসার শংকর কে বিশ্বাস বলেন, “আহতদের মধ্যে দুজনকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তবে গুরুতর অবস্থায় আবদুর বারিকে ভর্তি রাখা হয়েছে। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত; তার চিকিৎসা চলছে।”
থানায় দেওয়া অভিযোগের বরাতে নাহিদুল বলেন, সিঅ্যান্ডবি মোড়ে ‘জুলাই চত্বরে’ এনসিপির জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে তারা তিন জন মোটরসাইকেলে করে কাটাখালীর দিকে রওনা হন। তখন চারটি মোটরসাইকেলে আট জন ব্যক্তি তাদের অনুসরণ করছিলেন।
বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিনোদপুর বাজার পার হওয়ার পর সামনে থেকে রং সাইডে অবস্থান করা সিলভার রঙের একটি প্রাইভেট কার হঠাৎ বেপরোয়া গতিতে তাদের মোটরসাইকেলের দিকে ধেয়ে আসে।
তিনি হাত নেড়ে থামানোর চেষ্টা করলেও গাড়িটি আরও দ্রুতগতিতে তাদের দিকে ছুটে আসে বলে জানান নাহিদুল।
তার ভাষ্য, “মোটরসাইকেল চালকের চেষ্টা সত্ত্বেও প্রাইভেট কারটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ি।
“পরে গাড়িটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান চালক। ধাক্কার পর পেছন থেকে আসা চারটি মোটরসাইকেলও ইউটার্ন নিয়ে প্রাইভেট কারের দিকেই চলে যায়।”
নাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, “সংবাদ সম্মেলন শেষ করে প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে আমাদের অনুসরণ করা হয়। এরপর হঠাৎ একটি সিলভার মাইক্রোবাস আমাদের মোটর বাইককে আঘাত করে। এটি কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। কারণ যেদিক দিয়ে গাড়িটি আসছিল, সেটি স্বাভাবিক চলাচলের পথ নয়।
‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে কাজ করছি। এ জন্য অনেক পক্ষ আমার ওপর ক্ষুব্ধ থাকতে পারে।’’
এ ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে যান রাজশাহী মহানগর এনসিপির নেতারা।
মহানগর এনসিপির সদস্য সচিব আতিকুর রহমান বলেন, “গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজুর প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানাই।”
এনসিপি নেতার অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি আবদুল মালেক জানিয়েছেন।