বুধবার ১২ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২৮ ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

অন্তঃকোন্দলে ‘২ লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি’ দিয়ে মামুনকে হত্যা: ডিবি ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৩৯ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাড়িতে তল্লাশি, আটক ৬ হাইকোর্ট বিভাগে ৬৭ বেঞ্চ পুনর্গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি দেড়শ ছাড়িয়ে জয়, রান পাহাড়ের পথে বাংলাদেশ চীন সফরে স্পেনের রাজা ফিলিপ বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার ‘দায়বদ্ধতা’ রয়েছে : ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের মধ্যে ইরাকে ভোটগ্রহণ শপথ নিলেন ২১ বিচারপতি কেরাণীগঞ্জে শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ রমনা থানার সামনে পুলিশের গাড়িতে আগুন, উত্তরায় মাইক্রোবাসে এবার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে পেট্রোলবোমা গাজীপুরে তিন বাসে আগুন ঢাবির পাঁচ ভবনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের তালা ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বিজিবি মোতায়েন শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যা: ২ শ্যুটারসহ গ্রেপ্তার ৫

জাতীয়

অন্তঃকোন্দলে ‘২ লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি’ দিয়ে মামুনকে হত্যা: ডিবি

 প্রকাশিত: ১৭:৫১, ১২ নভেম্বর ২০২৫

অন্তঃকোন্দলে ‘২ লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি’ দিয়ে মামুনকে হত্যা: ডিবি

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুন হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, অপরাধ জগতে অন্তঃকোন্দলের জেরে ‘২ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করে’ তাকে খুন করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দিয়েছেন ডিএমপির গোয়েন্দা ‍বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।

এই ঘটনায় যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন, মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল ওরফে কুত্তা ফারুক (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ ওরফে জীবন (৪২)।

ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, ফারুক ও রবিন সরাসরি খুনে জড়িত। তারাই গুলি করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সানজিদুল ইসলাম ইমন ও নিহত মামুন ছাড়াও তাদের গ্রুপে রনি নামে আরেকজন ছিলেন। মামুনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রনি এই হত্যার ‘পরিকল্পনা’ করেন।

পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার কাছে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ফটকে সোমবার বেলা ১১টার দিকে গুলি করে হত্যা করা হয় মামুনকে।

মঙ্গলবার রাতে হত্যার ঘটনায় ‘সরাসরি জড়িত’ দুজনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার ও দুটি অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য দেয় পুলিশ।

গ্রেপ্তার ইউসুফের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের তথ্য দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে নরসিংদী সদর থানাধীন ভেলানগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও রুবেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার থেকে ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ইউসুফের কাছে অস্ত্র ও গুলি পাওয়া গেছে। নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তারের সময় ফারুক আর রবিনের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, “এই টাকাসহ মোট ২ লাখ টাকা রনি হত্যার চুক্তি অনুযায়ী দিয়েছিলেন বলে তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।”

হত্যাকাণ্ডের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ রনির পরিচয় দিতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল বলেন, রনি এক সময়ে মুদি দোকানি ছিলেন। বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুনের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকা তারা নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে রনি পলাতক, তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে এই হত্যার ঘটনা মনে করা হলেও রনিকে গ্রেপ্তারের পর জানা যাবে হত্যার মূল কারণ এবং এর সাথে ইমনের কোনো যোগসূত্র আছে কি না।

ডিঅতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য ও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে ‘অপরাধীদের’ শনাক্ত করা হয়েছে।

“হত্যাকাণ্ডের পর ফারুক ও রবিন তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রেন্ট এ কারের গাড়িচালক রুবেলের কাছে দেন। রুবেল অস্ত্র ও গুলি পাওয়ার পর তা রনিকে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেন। পরে সেই অস্ত্র মোহাম্মদপুরে পেশায় দর্জি ইউসুফের কাছে রাখা হয়। ইউসুফ আমাদের বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের দিন রুবেল অস্ত্র-গুলি ভর্তি একটি ব্যাগ তার কাছে রাখার জন্য বুঝিয়ে দিয়ে যান।”

ডিবি প্রধান বলেন, রনি গত কয়েকদিন ধরে মামুনকে হত্যার ‘পরিকল্পনা’ করে আসছিলেন। কিন্তু বারবারই ব্যর্থ হন। পরে মামলার হাজিরার দিন বেছে নেন রনি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যার দিকে রনি তার নিজের বাসায় রবিনকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানান।

শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী রনি সোমবার সকাল ৯টার দিকে রবিনকে ফোন করে আদালত এলাকায় যেতে বলেন। রবিন তার বন্ধু শামীমকে ডেকে নেন। অন্যদিকে রনির নির্দেশে ফারুক সুমন ও কামাল নামে আরও দুইজনসহ আদালত এলাকায় যান। তাদের সঙ্গে আরও দুই-একজন ছিলেন। প্রথমে সুমন ও ফারুককে গুলি করার জন্য বলেন রনি। এক পর্যায়ে সুমন ও রনির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রনি তখন সুমনের কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে একটি ফারুক ও অপরটি রবিনকে দিয়ে হত্যার মিশনে পাঠান।

ফারুক ও রবিন মুত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা প্রথমে বেড়িবাঁধ হয়ে রায়েরবাজারে যান। পরে রনির পরিকল্পনা অনুযায়ী রুবেল, ফারুক, রবিন ও শামীম ঢাকা থেকে সিলেটে যান। সেখান থেকে তারা ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে তারা সাতক্ষীরা সীমান্তের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু নরসিংদী পৌঁছলে ডিবি তাদের গ্রেপ্তার করে।