মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪, আশ্বিন ২৩ ১৪৩১, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কর্মস্থলে না ফেরা পুলিশদের ক্রিমিনাল হিসেবে দেখব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

 প্রকাশিত: ১৬:২৫, ১ অক্টোবর ২০২৪

কর্মস্থলে না ফেরা পুলিশদের ক্রিমিনাল হিসেবে দেখব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

যে পুলিশ সদস্যরা এখনো কাজে যোগ দেননি, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, “যারা যোগ দেয়নি, তাদেরকে আমরা ক্রিমিনাল হিসেবে দেখব। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।”

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন পদমর্যাদার অন্তত ১৮৭ পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দেননি বলে গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক বার্তায় জানিয়েছিল পুলিশ সদর দপ্তর।

কাজে না ফেরা এই পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায়।

আবার শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ২৩ কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে আত্মগোপনে ছিলেন তারা।

সরকার পতনের পর দেশজুড়ে থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আক্রমণের শিকার হতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। আগুন দেওয়া হয় থানা ও পুলিশের স্থাপনায়। লুট করা হয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ।

আন্দোলনের মধ্যে মানুষের ব্যাপক সেই ক্ষোভের সময় পুলিশের বেশির ভাগ সদস্য কাজে ফেরেননি। পরে কর্মবিরতিতে যায় পুলিশ। তাদের অনুপস্থিতিতে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।

সরকার পতনের তিন দিন পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গহণ করে। নতুন সরকারের সময় কারফিউ না থাকলেও দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন থাকে। পুলিশের অনুপস্থিতিতে শুরুর দিকে থানায় থানায় দায়িত্ব পালন করেন সেনা সদস্যরা।

পরে আন্দোলন শেষে পুলিশ কাজে ফিরলেও হারানো সেই মনোবল ফেরেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে, গুলিতে প্রাণহানিও ঘটেছে। এগুলো বিচারবহিভূত হত্যাকাণ্ড কিনা– সেই প্রশ্ন একজন সাংবাদিক উপদেষ্টার সামনে রাখেন।

জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “অপারেশনে গেলে দু'একজন গুলিবিদ্ধ হবেই।”

এর আগে তিনি যৌথ বাহিনীর অভিযানে গুলিতে প্রাণহানির বিষয়ে জানতে চান। তখন পাশ থেকে একজন বলেন, ‘সংঘর্ষের মধ্যে’ মৃত্যু হয়েছে। সেখানে উপস্থিত শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাখ্যা জানারও প্রয়োজন রয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এই সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর ব্যাপারে সরকারের কঠোর নজরদারি রয়েছে।

"ইউপিডিএফ এর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আছে। তারা বাইরে থেকেও অস্ত্র পাচ্ছে। এগুলোর ব্যাপারে সরকার কাজ করছে।”

মূলত দুর্গাপূজা সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। উপদেষ্টা বলেন, “এবারের পূজা সবচেয়ে নির্বিঘ্নে হবে। পূজা নির্বিঘ্নে করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।”

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা খুব ভালো এটা বলা যাবে না। তবে সন্তোষজনক বলা যায়। ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।"

তিনি বলেন, এরই মধ্যে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু শুরু হয়েছে, দুয়েক দিনের মধ্যে এসআই নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু হবে। বিজিবি- আনসারেও নিয়োগ দেবে সরকার।