শনিবার ২১ জুন ২০২৫, আষাঢ় ৮ ১৪৩২, ২৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ব্রেকিং

তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

জাতীয়

ছাত্রদের দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: ইউনূস

 প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ৮ আগস্ট ২০২৪

ছাত্রদের দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে দেশে ফিরে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে এ দেশের ‘পুনর্জন্ম দিয়েছে’, তাদের দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

প্রবল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা দেশে চলছে তা বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি; বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই হবে তার প্রথম কাজ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দেশকে ‘স্বাধীনতা’ এনে দিয়েছে মন্তব্য করে ইউনূস বলেন, “যে তরুণ সমাজ এটাকে সম্ভব করেছে, তাদের প্রতি আমি আমার সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এরা এদেশকে রক্ষা করেছে। এ দেশকে পুনর্জন্ম দিয়েছে, এ পুনর্জন্ম যে বাংলাদেশ পেল, সে বাংলাদেশ যেন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলতে পারে, সেটাই আমাদের শপথ। সেটা আমরা রক্ষা করতে চাই, আমরা এগিয়ে যেতে চাই।”

সবার আগে জনগণের আস্থা ফেরানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা যদি আমার ওপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখেন, তাহলে নিশ্চিত থাকেন, দেশের কোনো জায়গায় কারও ওপর হামলা হবে না। এটা আমাদের প্রথম দায়িত্ব।

“আর আমার কথা যদি না শোনেন, তাহলে আমার প্রয়োজন এখানে নাই। আমাকে বিদায় দেন। আর আমাকে প্রয়োজন মনে করলে আমার কথা শুনতে হবে। আমার প্রথম কথা হল, বিশৃঙ্খলা থেকে সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করেন, যাতে আমাদের ছাত্ররা আমাদের যা যা পথ দেখায়, আমরা সেই পথে এগিয়ে যেতে পারি।”

অলিম্পিকের আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিতে ইউনূস গিয়েছিলেন ফ্রান্সে। এর মধ্যে ছাত্র জনতার বিপুল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের সরকারের পতন ঘটে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচনের প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেনাবাহিনীও তাতে সমর্থন দেয়।

এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের সঙ্গে একমত হন।

শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে বুধবার প্যারিস থেকে দেশের পথে রওনা হন ইউনূস। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় নামেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান, নতুন আইজিপি ময়নুল ইসলাম এবং র‌্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অধ্যাপক ইউনূসকে অভ্যর্থনা জানান।

সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল শিক্ষার্থীদের যে প্ল্যাটফর্ম, সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কয়েকজনও উপস্থিত ছিলেন। মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তারা তুলে দেন ফুলের তোড়া।

সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, উবিনিগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন বিমানবন্দরে।

গ্রামীণ চেকের ফতুয়া ও কটি পরিহিত ৮৪ বছর বয়সী অধ্যাপক ইউনূস হাস্যোজ্জ্বল মুখে হাত মেলান সবার সঙ্গে। ২০০৬ সালে নোবেল জয়ের পর অধ্যাপক ইউনূসকে ঘিরে যে বাঁধ ভাঙা আনন্দের জোয়ার বয়েছিল, দেড় যুগ পরে সেই উচ্ছ্বাসের আবহ ফেরে দেশে।

বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে ইউনূস যখন বক্তৃতা করছিলেন, রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ কথা স্মরণ করে তার কণ্ঠ ধরে আসে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “সে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এটা কেউ ভুলতে পারবে না। কি অবিশ্বাস্য এক সাহসী যুবক! বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর থেকে কোনো যুবক, কোনো যুবতীই আর হার মানেনি, সামনে এগিয়ে গেছে। এবং বলেছে, যত গুলি মারো, মরতে রাজি আছি। যার কারণে সারা বাংলাদেশজুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে। যার ফলে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করল।

“এই স্বাধীনতাটা রক্ষা করতে হবে। শুধু রক্ষা করা না, এই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছাতে হবে। নইলে এই স্বাধীনতার কোনো দাম নেই। এই স্বাধীনতাকে পৌঁছানোই আমাদের প্রতিজ্ঞা, আমাদের শপথ। মানুষ যেন জানে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অর্থ হল, তার নিজের পরিবর্তন; ব্যক্তির পরিবর্তন, সুযোগের পরিবর্তন, তার ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের পরিবর্তন। এটা যেন প্রত্যেকে বুঝতে পারে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের ক্ষেত্রে তরুণরাই যে প্রাধান্য পাবে, সে কথা তুলে ধরে ইউনূস বলেন, “এই তরুণ সমাজকে বোঝানো যে, এই দেশ তোমাদের হাতে। তোমরা এটাকে যেভাবে স্বাধীন করতে পেরেছ, তোমাদের মনের মত করে এটাকে গড়তেও পারবে। তোমাদের দেখে সবাই শিখবে, কীভাবে একটা দেশ একটা তরুণ সমাজ পাল্টে ফেলতে পারে।

“তোমাদের মধ্যে যে সৃজনশীলতা রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। এটা শুধু বই-খাতাতে লেখার জিনিস না। এটা প্রকাশ করার জিনিস, স্থাপন করার জিনিস।”

 

বিগত বছরগুলোতে সরকার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক এমডি ইউনূস বলেন, “সরকার বলে একটা জিনিস আছে, কিন্তু মানুষের কোনো আস্থা নেই। মানুষ মনে করে, সরকার একটা দমন-নিপীড়নের একটা যন্ত্র। সে ভয়ের একটা জিনিস, তাকে সামাল দিয়ে চলা। এটা সরকার হতে পারে না।

“সরকারকে দেখে মানুষের বুক ফুলে উঠবে যে, সরকার মানুষকে সাহায্য করবে, তার পাশে এসে দাঁড়াবে। কিন্তু সরকার তার পাশে দাঁড়ায় না। এখন যে সরকার হবে, সে সরকার মানুষকে রক্ষা করবে। মানুষের আস্থাভাজন হবে, সেই আস্থাটা আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে মানুষের মনে। তাহলে মানুষও এতে যোগ দেবে।”

তিনি বলেন, “মানুষ এখন পিছিয়ে থাকে যে, ‘কীসের মধ্যে আমাদের ঢুকিয়ে দেবে!’ সারা বাংলাদেশ একটা বড় পরিবার। এ পরিবার আমরা একসঙ্গে চলতে চাই। আমাদের মধ্যে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা সরিয়ে ফেলতে চাই। যারা বিপথে গেছে, তাদেরকে পথে আনতে চাই। যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সরকারবিহীন চার দিনে দেশে যে সহিংসতা হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের হবু প্রধান বলেন, “ আসার পথে শুনলাম, এখানে আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটছে, মানুষ মানুষকে আক্রমণ করছে, ঘরবাড়ি-সম্পদ জ্বালিয়ে দিচ্ছে, চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। অফিস আদালতে আক্রমণ করছে, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করছে। এগুলো হল ষড়যন্ত্রের অংশ।

“এগুলো আমাদের বিষয় না। আমাদের কাজ হল, প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করা। প্রতিটি মানুষ আমাদের ভাই, আমাদের বোন। আমাদের কাজ হল, প্রত্যেককে রক্ষা করা, একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা- এগুলো হল অগ্রগতির বড় শত্রু। আমাদের যে যাত্রা শুরু হল, সেই যাত্রার শত্রু। সেই শত্রুদের যেন রোধ করা যায়, বুঝিয়ে শুনিয়ে হোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে হোক, তাকে বোঝাতে হবে। তাকে মেরে-কেটে বোঝানো যাবে না।”

ইউনূস বলেন, “আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা আমাদের প্রথম কাজ। আইনশৃঙ্খলা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারব না।”

 

বাংলাদেশকে ‘অনেক সম্ভাবনার’ একটি দেশ হিসেবে বর্ণনা করে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, সেই সম্ভবা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

“এখন আবার সেই বীজতলা তৈরি করতে হবে। তারা (তরুণরা) এই দেশটা তৈরি করবে, তাদের হাত দিয়েই হবে। এবং তাদের দিকে আমরা তাকাব। তাদের নির্দেশ মত আমরা অগ্রসর হব।

“এখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন- সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী তাদের প্রতিও অনুরোধ, আমরা একটা পরিবার। এটার মধ্যে আমাদের যেন গোলযোগ না হয়। আমরা একযোগে একসাথে চলতে পারি, এবং আমরা ত্বরিৎ গতিতে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগিয়ে যাব- এটাই আমার কামনা।”

ইউনূস বলেন, “আপনাদের সবার কাছে আবেদন, উনাদেরকে আপনারা সে সুযোগ দিন, আমরা যেন সে পথে এগিয়ে যাই। প্রথিবীর সবাই আগ্রহ করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। এখানে যখন ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছে, পৃথিবীর সব জায়গা থেকে, অনেক অনেক জায়গা থেকে যে তারা অবাক হয়ে গেছে- আমাদের তো গা শিউরে উঠেছে প্রতিদিন যা ঘটেছে, অবিশ্বাস্য কাণ্ড!

“তাদেরও এটা স্পর্শ করেছে, তাদের তরুণরাও জেগে ওঠেছে আমাদের ছেলেমেয়েদের এ অভিজ্ঞতা থেকে। কাজেই আমাদের কাজ হবে এগুলো সম্পূর্ণ করা। আমরা আজকে থেকে শুরু করলাম। আমরা আশা করি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারব।”

বক্তৃতা শেষে বিমানবন্দরেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করে ইউনূস রওনা হন গুলশানের বাসার উদ্দেশে। রাত ৮টায় বঙ্গভবনে তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।