শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

কেমন হবে জান্নাতি হুর?

 প্রকাশিত: ০৯:৩২, ২৭ আগস্ট ২০২১

কেমন হবে জান্নাতি হুর?

মহান আল্লাহ বলেন,
'আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।' -[সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২৫]

তাঁদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত থাকবে নব যৌবনের স্বর্গীয় সুধা। তাদের গাল হবে গোলাপ ও আপেলের মত লাল মিশ্রিত সাদা বর্ণের। গলায় পরানো থাকবে মণি- মুক্তার অলংকার। তাদের চেহারা সূর্যের মত উজ্জ্বল চকচকে হবে। তারা যখন হাসবে, তখন তাদের মুখমন্ডল থেকে বিজলির মত আলোর চমক বের হতে থাকবে।

জান্নাতবাসী একজন পুরুষ তাঁর স্ত্রীর গালে নিজের চেহারা দেখতে পাবেন। যেমন আয়নায় নিজের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মাংস ও পোষাকের ভিতরে আচ্ছাদিত হাড়ের মগজ সমূহ বাহির থেকে দেখা যাবে। জান্নাতের একজন হুর যদি দুনিয়াতে একবার দৃষ্টি দিত, তাহলে আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থান সুভাসে ভরে যেত, সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহর প্রশংসা ও বড়ত্ব বর্ণনা করত, পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তকে তথা সমগ্র পৃথিবীটাকে সুসজ্জিত করে দিতো, প্রতিটি চোখ সকল জিনিষ থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে তাঁর দিকে চেয়ে থাকত, সূর্যের আলোতে যেমন তারকারাজির আলো মিটে যায়, তেমনি তাঁর চেহারার আলোতে সূর্যের আলো মিটে যেত। বেহেশতের একজন হুরকে যদি দুনিয়ার মানুষেরা দেখতে পেত, তাহলে সকল দুনিয়াবাসী আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করত। জান্নাতী মহিলার মাথার একটি ওড়নার মূল্য দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সকল বস্তু হতেও বেশী হবে।

হুরদের কাছে তাদের স্বামীদের সাথে মিলিত হওয়া জান্নাতের অন্যান্য সকল বস্তু হতে অধিক আনন্দময় হবে। তাদের স্বামীদের সাথে দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পরও তাদের সৌন্দর্য্য ও ভালবাসার বিন্দুমাত্র কমতি হবেনা। বরং কাল যতই অতিবাহিত হবে, ততই তাদের সৌন্দর্য্য ও ভালবাসা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। বেহেশতের হুরগণ সকল দোষ-ত্রুটি ও নাপাকী থেকে পূত-পবিত্র হবেন। তারা গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব, মাসিক রক্তস্রাব, প্রস্রাব-পায়খানা সহ সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে সম্পূর্ণ পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন থাকবেন। তাদের যৌবন শেষ হবেনা, পোষাক পুরাতন হবেনা।

তাদের সাথে সহবাসে কোন ক্লান্তি বোধ হবেনা। তারা কেবল তাদের স্বামীদের উপরই দৃষ্টি অবনত রাখবেন। স্বামী ছাড়া অন্য কারও কথা মনে কল্পনাও করবেন না। স্বামীর চোখের দৃষ্টিও কেবল তাঁর দিকেই থাকবে। কারণ সেই তো তার একমাত্র চাওয়া-পাওয়ার বস্তু। তার দিকে তাকাইলে তাঁকে আনন্দিত করে তুলবেন। আদেশ দিলে তা পালন করবেন। তাকে রেখে কোথায়ও গেলে আমানতদারীর হেফাযত করবেন। মোট কথা জান্নাতী ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে চরম আনন্দে দিনাতিপাত করবেন। জান্নাতের স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীগণের পূর্বে কোন মানুষ বা জিন স্পর্শও করতে পারেনি। যখনই তার দিকে তাকাবেন, আনন্দে মন ভরে দিবেন, যখন কথা বলবেন ছন্দময় মিষ্টি কথা দ্বারা হৃদয় ভরে দিবেন। জান্নাতের রুমসমূহে যখন তারা ঘুরাফেরা করবে, তখন তাদের আলোতে রুমগুলো আলোময় হয়ে যাবে। বেহেশতের অধিবাসী নারী-পুরুষগণ হবেন একই বয়সের পরিপূর্ণ যুবক-যুবতী। 

আপনি যদি বেহেশতের হুরদের সৌন্দর্য্যরে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আপনি কি চন্দ্র ও সূর্যের সৌন্দর্য্য ও উজ্জ্বলতা প্রত্যক্ষ করেছেন? তাদের চোখের রং সম্পর্কে জানতে চাইলে জেনে নিন যে, তাদের চোখের রং হবে পরিস্কার সাদার মাঝেকাকের কালো চোখের মত কালো বর্ণের। তাদের শরীরের কোমলতা হবে বৃক্ষের কচি শাখা-পাতার ন্যায় নরম ও কোমল। 

আপনি যদি তাদের শরীরের রং সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, তবে জেনে নিন যে তাদের শরীরের রং হবে প্রবাল ও পদ্মরাগের মত উজ্জ্বল। জান্নাতে মুমিনদের জন্য রয়েছে সচ্চরিত্রা সুন্দরী রমণীগণ। তাদের বাহিরের সৌন্দর্যের সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ চরিত্রও হবে অত্যন্ত সুন্দর ও পূত-পবিত্র। তারা হবে অন্তরের প্রশান্তি ও চক্ষু শীতলকারিনী। তারা হবে স্বামীদের কাছে অতি প্রিয় কোমল দেহ বিশিষ্ট আরব্য রমণীতুল্য। সেই রমণী সম্পর্কে আপনাদের কিরূপ ধারণা?ূূা তিনি যখন তার স্বামীর চেহারার দিকে তাকাবেন, তখন তার হাসিতে জান্নাত আলোময় হয়ে উঠবে। 

যখন তিনি এক প্রাসাদ থেকে অন্য প্রাসাদে গমণ করবেন, তখন আপনি দেখে বলবেন এই তো সূর্য তার কক্ষপথ ছেড়ে এখানে চলে এসেছে। যখন তিনি তার স্বামীর সাথে কথা বলবেন, তখন কতইনা সুন্দর হবে সেই কথোপকথন!!। যখন তাঁর স্বামীর সাথে আলিঙ্গন করবেন, তখন কতইনা সুন্দর হবে সেই আলিঙ্গন। হুরীরা যখন গান গাইবে, তখন কতইনা সুন্দর হবে সে গানের কন্ঠ!!। যখন তাদের সাথে মেলামেশা করবেন। 

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: