শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

অন্ধ আনুগত্যের পরিণতি

 প্রকাশিত: ১০:০৩, ১ এপ্রিল ২০২১

অন্ধ আনুগত্যের পরিণতি


 আল্লাহ তাআলা জাগতিক শৃঙ্খলার জন্য মানবসমাজে কিছু মানুষকে নেতৃত্ব দান করেছেন। যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নেতৃত্বের গুণ ও অবস্থান লাভ করেছে তাদের দায়িত্ব মানুষকে সুপথ দেখানো। একইভাবে অনুসারীদের দায়িত্ব হলো কারো আনুগত্য ও অনুসরণ করার আগে কোরআন-হাদিসের আলোকে যাচাই করে নেওয়া। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাদের মধ্য থেকে নেতা মনোনীত করেছিলাম—যারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথপ্রদর্শন করত, যেহেতু তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আর তারা ছিল আমার নিদর্শনাবলিতে দৃঢ় বিশ্বাসী।’ (সুরা : সাজদা, আয়াত : ২৪)
আনুগত্যের তিন স্তম্ভ : ইসলামী শরিয়তে আনুগত্য ও অনুসরণের মূল ভিত্তি তিনটি—
মানুষের আনুগত্য বৈধ : শর্তসাপেক্ষে মানুষের জন্য মানুষের আনুগত্য বৈধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীরা, তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসুলের ও তোমাদের নেতৃবৃন্দের।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৫৯)

আয়াতে উল্লিখিত ‘উলুল আমর’ বা নেতৃবৃন্দ দ্বারা বিশেষভাবে ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং সাধারণভাবে সব ধরনের বৈধ নেতৃত্ব উদ্দেশ্য।

দুই. পাপ কাজে আনুগত্য নয় : ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো মানুষের অনুসরণ ও অনুকরণের শর্ত হলো তা অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশের অনুকূল হবে, বিপরীত হবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাপ কাজের আদেশ না করা পর্যন্ত ইমামের কথা শোনা ও তাঁর আদেশ মান্য করা অপরিহার্য। তবে পাপ কাজের আদেশ করা হলে তা শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৯৫৫)

তিন. মানুষের আনুগত্য চিরন্তন নয় : আনুগত্যের প্রশ্নে ইসলাম ব্যক্তি বা বংশের চেয়ে ‘দ্বিনদারি’ ও ন্যায়ানুগতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। সুতরাং কোনো নেতৃত্ব যদি দ্বিন থেকে বিচ্যুত হয়, তবে তার আনুগত্য পরিহার করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি তোমাদের নেতা হিসেবে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ দাসকে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং সে আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের নেতৃত্ব দেয়, তবে তার কথা শোনো এবং আনুগত্য করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪১৯২)

অন্ধ অনুকরণ নিন্দনীয় : বিবেক-বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে কোনো কিছুর অন্ধ অনুকরণ ইসলামে অনুমোদিত নয়। যারা সত্যের বিপরীতে অন্ধ অনুকরণের অংশ হিসেবে পূর্বপুরুষের সংস্কার, মতবাদ ও বিশ্বাস আকড়ে ধরে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে পবিত্র কোরআনের অসংখ্য স্থানে তাদের নিন্দা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তাদের বলা হয়, এসো আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে এবং রাসুলের দিকে। তারা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের যার ওপর পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ১০৪)

অন্ধ অনুসারীদের প্রতি কোরআনের প্রশ্ন : যারা পূর্বপুরুষের অন্ধ অনুকরণ করে এবং কুসংস্কার আঁকড়ে ধরে থাকতে চায় তাদের প্রতি কোরআনের প্রশ্ন হলো, ‘যদি তাদের পূর্বপুরুষরা কিছু না জানে এবং তারা সুপথপ্রাপ্ত না হয়?’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ১০৪) অর্থাৎ পূর্বপুরুষরা ভুলের মধ্যে থাকলেও কী তারা তাদের অনুসরণ করবে? তাদের তো উচিত সুপথের অনুসারী ও সত্যসন্ধানী হওয়া।
এক.

 

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: